img

Follow us on

Saturday, May 18, 2024

AIFF and BCCI: বাজিমাত বাংলার! ভারতীয় ফুটবল ও ক্রিকেটের মসনদে দুই বাঙালির দাপট

বিসিসিআইয়ের সভাপতি পদে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই দক্ষ ক্রীড়া প্রশাসক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এবার পালা এআইএফএফ-এর নয়া প্রেসিডেন্ট কল্যাণ চৌবের

img

এআইএফএফ সভাপতি কল্যাণ চৌবে এবং বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।

  2022-09-05 14:22:31

ঈষিকা বন্দ্যোপাধ্যায়: ‘হোয়াট বেঙ্গল থিংক্স টুডে, ইন্ডিয়া উইল থিংক টুমরো’। গোপাল কৃষ্ণ গোকলের সেই বহু চর্চিত উক্তি আজ ভারতীয় ক্রীড়াক্ষেত্রে ভীষণভাবে প্রযোজ্য। বহু বছর পর দেশের দুই জনপ্রিয় ক্রীড়া সংগঠনের শীর্ষপদে দুই বঙ্গসন্তান। ২০১৯ সালে বিসিসিআই (BCCI) সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly)। কয়েকদিন আগেই সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের (AIFF) সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন কল্যাণ চৌবে (Kalyan Chaubey) । তাঁর কাছে পরাজিত হওয়ার পর ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক বাইচুং ভুটিয়া ফেডারেশনের নির্বাচনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগ করেছেন। যদিও তার কোনও সারবত্তা নেই বলে দাবি বিভিন্ন রাজ্য ফুটবল সংস্থার কর্তাদের। তাঁদের যুক্তি, যদি রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হয়, তাহলে সহ-সভাপতি অন্য কেউ হতেন। আসলে কল্যাণ চৌবেকেই দিল্লির ফুটবল হাউসের মসনদে চেয়েছেন অধিকাংশ রাজ্য। তাই সভাপতি পদে তিনি ৩৩-১ ব্যবধানে বাইচুংকে হারিয়েছেন কল্যাণ।

অতীতেও বিসিসিআই কিংবা এআইএফএফের সভাপতি পদে একই সময়ে পাওয়া গিয়েছে বাংলার দুই প্রতিনিধিকে। ১৯৮৯ সালে বিশ্বনাথ দত্ত হয়েছিলেন বোর্ড সভাপতি। সেই সময় ফেডারেশনের শীর্ষপদ অলঙ্কৃত করেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সী। তিনি ১৯৮৮-২০০৮, একটানা দায়িত্ব সামলেছিলেন। সেই সময় কালেই সিএবি থেকে বিসিসিআই সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন জগমোহন ডালমিয়াও। একটানা না হলেও, ডালমিয়া কিন্তু ধাপে ধাপে বেশ কয়েকবার বোর্ড সভাপতি এবং আইসিসি প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভারতীয় ক্রিকেটে আর্থিক জোয়ার আনার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা ছিল ‘জগু’দার। একাধিক বিশ্বমানের টুর্নামেন্ট আয়োজনের পাশাপাশি ক্রিকেটকে বানিজ্যিকরণের ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির আমলেও ভারতীয় ফুটবল নানাভাবে উপকৃত হয়েছিল।

২০০৯ সালে প্রফুল্ল প্যাটেল দায়িত্ব নেওয়ার পর সেই অর্থে ভারতীয় ফুটবল আর এগোয়নি। বরং কিছু সাগরেদদের নিয়ে ভারতীয় ফুটবলের মসনদ দখলে রেখেছিলেন তিনি। আর তার বিরুদ্ধই বার বার সোচ্চার হয়েছিলেন প্রাক্তন ফুটবলাররা। সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ায় মামলা। এক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করতে হয় দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও (Narendra Modi)। ভারতীয় ফুটবলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ফিফা (FIFA)। প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্র সরকারের হস্তক্ষেপে বিষয়টির মীমাংসা হয়। এক্ষেত্রে কল্যাণ চৌবের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটা ঠিক খেলা ছাড়ার পর তিনি প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে এসেছেন। বিজেপির টিকিটে নির্বাচনে লড়েছেন। কিন্তু কখনওই তিনি রাজনীতি ও ফুটবলকে এক করে ফেলার চেষ্টা করেননি।

কল্যাণ ঘনিষ্ঠ এক প্রাক্তন ভারতীয় ফুটবলারের কথায়, ‘ও চাইলে বিজেপির শীর্ষ নেতাদের বলে ফেডারেশনের সভাপতি পদ থেকে আগেই প্রফুল্ল প্যাটেলকে সরিয়ে দিতে পারত। কিন্তু সেটা করেনি। আইনি পথে লড়েছে। জয়ও পেয়েছে। বরং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট মন্ত্রী অমিত শাহকে ধন্যবাদ জানানো উচিত আমাদের। তাঁরা চাইলে, প্রফুল্ল প্যাটেলের মতো কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে ফেডারেশনের সভাপতি করতে পারতেন। কিন্তু সেটা করেননি। বরং ফুটবলের প্রশাসনে কল্যাণের মতো প্রাক্তন ফুটবলারকেই তারা সমর্থন করেছেন। না হলে তো আমরা কোনও বঙ্গসন্তানকে এই পদে দেখতে পেতাম না।'

অনেকে বলে বিজেপি বাংলা বিরোধী, কিন্তু সে কথাও মানতে নারাজ ক্রীড়ামহল। অধিকাংশের মতে, বিসিসিআই সভাপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে জয় শাহ তো সচিব না হয়ে বোর্ড সভাপতি হতেই পারতেন, কিন্তু হননি। বাংলা তথা দেশের আইকন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কেই সেদিন সমর্থন করেছিলেন অনুরাগ ঠাকুর, অমিত শাহরা। অনেকেই দেশের ক্রীড়াক্ষেত্রে গৈরীকরণের অভিযোগ করছেন। ভুল কিছুই নয়। কেন্দ্রে যে দল ক্ষমতায় থাকে, তারা সব সময়ই ক্ষমতার বলে সব ক্ষেত্রেই নিজেদের লোককে বসানোর চেষ্টা করে। তবে, মোদি-শাহ জমানায় বিসিসিআই কিংবা ফেডারেশনের সভাপতি নির্বাচনে কিন্তু কংগ্রসের পথে হাঁটেনি বেজিপি। দল নয় বরং খেলাকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। ফুটবল ও ক্রিকেট দুই ক্ষেত্রেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রাক্তন ফুটবলার বা ক্রিকেটারের হাতে। 

Tags:

AIFF President Kalyan Chaubey

BCCI President Sourav Ganguly

AIFF and BCCI both President from Bengal


আরও খবর


খবরের মুভি


ছবিতে খবর