Piyali Basak: অদম্য সাহস ও মনের জোরেই জোড়া শৃঙ্গ জয় পিয়ালির

বহু বাধা পেরিয়েই পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গে আরোহণ করলেন বাঙালি মেয়ে। রবিবার প্রায় অক্সিজেন ছাড়াই এভারেস্টের চূড়োয় ওঠেন পিয়ালি।

এর আগে এভারেস্টের সামনে গিয়েও ফিরে আসতে হয়েছিল তাঁকে। এবার সব বাধাকে ঠেলে গিরিশৃঙ্গে পৌছন হুগলির মেয়ে পিয়ালি বসাক।

এভারেস্টের কিছুটা আগে যেখানে অক্সিজেনের পরিমাণ তলানিতে, সেখানে বাধ্য হয়ে সামান্য অক্সিজেনের সাহায্য নেন পিয়ালি।

অসম্ভব দৃঢ় মানসিকতা এবং শারীরিক সক্ষমতার জোড়েই এই অসাধ্য সাধন। ২০১৯ সালে প্রথম বার মাউন্ট এভারেস্টে চড়তে গিয়ে খারাপ আবহাওয়ার জন্যে ফিরে আসতে হয়েছিল তাঁকে। ফেরার পথে কিছু পর্বতারোহীর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়, যাঁরা অক্সিজেনের সাহায্য ছাড়াই এভারেস্টে ওঠার চেষ্টা করছিল। পিয়ালি তাঁদের দেখে উদ্বুদ্ধ হন এবং ঠিক করেন, পরের বার এভারেস্টে যখন চড়বেন, তখন অক্সিজেনের সাহায্য ছাড়াই উঠবেন। সেই প্রস্তুতিই শুরু করে দেন তিনি।

গত ১ মে বেস ক্যাম্পে পৌঁছন। এর পর আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। ৫ মে দ্বিতীয় ক্যাম্পে পৌঁছন। আবার বেস ক্যাম্পে ফিরে আসেন। এর পর ধীরে ধীরে এভারেস্টের শৃঙ্গের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন।

পিয়ালির সঙ্গে অভিজ্ঞ পর্বতারোহী দাওয়া শেরপা রয়েছেন। এভারেস্ট জয় করে এ বার ক্যাম্প ৪-এ ফিরে বিশ্রাম নেন পিয়ালি। এর পর মাউন্ট লোৎসের দিকে এগিয়ে যান তিনি।

এভারেস্ট সামিট করে নামার সময়ে প্রবল খারাপ আবহাওয়ার মুখে পড়েছিলেন চন্দননগরের প্রাথমিক স্কুলশিক্ষিকা পিয়ালি বসাক। শরীরেও ক্রমশ জাঁকিয়ে বসছিল ক্লান্তি। সে সময়েই অল্পবিস্তর ‘স্নো ব্লাইন্ড’ হয়ে যান পিয়ালি।

সাধারণত অধিক উচ্চতায় বরফের উপরে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি প্রতিফলিত হয়ে চোখে পড়লে কেউ ‘স্নো ব্লাইন্ড’ হতে পারেন। এ ক্ষেত্রে নীচে নেমে এসে দু’তিন দিনের বিশ্রামেই সেই সমস্যা সেরে যায়। কিন্তু পিয়ালির ধৈর্য ধরেনি। একটু সুস্থ হতেই মঙ্গলবার সকালে লোৎসের দিকে যাত্রা করেন তিনি।

মাত্র ছ’বছর বয়স থেকেই ট্রেকিং শুরু। তার পর থেকেই পাহাড়ে ওঠার নেশা পেয়ে বসে। তাঁর রঙ-তুলিতেও শুধুই পাহাড় আর বরফ।

২০০০ সালে অমরনাথ অভিযানে গিয়ে জঙ্গি হামলা খুব কাছ থেকে দেখেছেন পিয়ালি। কেদারনাথে গিয়ে মেঘভাঙা বৃষ্টি, তুষারধস থেকে জীবন হাতে করে শুধু বেঁচেই ফেরেননি, প্রায় ১০০ জন তীর্থযাত্রীকে বাঁচানোর অভিজ্ঞতাও রয়েছে তাঁর।

জীবনধারা পরিবর্তন করা তাঁর লক্ষ্য। পাহাড়ের চূড়াতেও মেয়েদের অধিকারের বার্তা দেন পিয়ালি।
