Trinamool Congress: শিলিগুড়িতে প্রশাসনের রোষের মুখে তৃণমূল কাউন্সিলর, শোরগোল
তৃণমূল নেতা রঞ্জন শীলশর্মা (ইনসেটে), হোর্ডিং দিয়ে জমি অধিগ্রহণ করছেন প্রশাসনের কর্তারা (নিজস্ব চিত্র)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দেবাশিস প্রামাণিকের পর এবার কি রঞ্জন শীলশর্মার পালা? সরকারি জমি দখল ও জমির অবৈধ কারবারের অভিযোগে ফুলবাড়ির বেতাজ বাদশা,সদ্য বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা দেবাশিস প্রামাণিক সম্প্রতি গ্রেফতার হয়েছেন। তারপর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে দখল হয়ে যাওয়া সরকারি জমি পুনরুদ্ধারে ঝাঁপিয়ে পড়েছে ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর। সেই অভিযানে মঙ্গলবার গজলডোবায় ঝুলন্ত সেতুর পাশে আট বিঘা জমি দখলমুক্ত করে সরকারি সাইন বোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়। এই জমি শিলিগুড়ি (Siliguri) পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর রঞ্জন শীল শর্মা দখল করেছিলেন। সেখানে ভেরি তৈরি করেছিলেন তিনি। একটি ঘরও ছিল। সেখানে নিয়মিত দলের নেতারা আসতেন। সেই জমি প্রশাসন দখল করে নেওয়ায় তাতে গুঞ্জন শুরু হয়েছে, এবার কি তাহলে রঞ্জন শীলশর্মার গ্রেফতার হওয়ার পালা?
লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরপরই মুখ্যমন্ত্রী সরকারি জমি দখল ও জমি মাফিয়ারাজের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। জমির অবৈধ কারবার বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে। তাহলে এতদিন কেন নীরব ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী? এই প্রশ্নে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি বিধানসভা এলাকায় তৃণমূলের ভরাডুবি হয়েছে। শিলিগুড়ি (Siliguri) পুরসভার ৪৭ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৪৬ টি ওয়ার্ডেই বিজেপির থেকে তৃণমূল অনেকটা পিছিয়ে। মেয়র সহ তৃণমূল কাউন্সিলরদের ওয়ার্ডেও একচেটিয়া ভোট পেয়ে বিজেপি বড় লিড নিয়েছে। বাদ নেই এই নেতার ওয়ার্ডও। এটা মুখ্যমন্ত্রী মেনে নিতে পারেননি। তাই, এলাকার শীর্ষ নেতা ও কাউন্সিলরদের অবৈধ কারবারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে সকলকে বার্তা দিতে চাইছেন বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে।
আরও পড়ুন: গণপিটুনির নায়ক তৃণমূল নেতা জয়ন্ত সিং, জুয়া-সাট্টা, মধুচক্র কোনটায় নেই তিনি!
জানা গিয়েছে, রঞ্জন শীলশর্মা শিলিগুড়ি (Siliguri) পুরসভার ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর। পেশায় তিনি প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক। এলাকায় তাঁর বিশাল প্রভাব-প্রতিপত্তি। একবার দলকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে জিতে কাউন্সিলর হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে জমির অবৈধ কারবার করা ও মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু, তাতে রঞ্জনের কোনও সমস্যা হয়নি। বরাবরই তিনি ডাকাবুকো নেতা হিসেবে পরিচিত। গৌতম দেবের বিরুদ্ধে পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে তৃণমূল (Trinamool Congress) কাউন্সিলর হয়েও তিনি বারবার সরব হয়েছেন। তিনি সব সময় নিজের সিদ্ধান্তেই চলেন। প্রকাশ্যে দলের মেয়রের সমালোচনা করতে তাঁর গলা কাপে না। তাই সরকারি জমি প্রশাসন ফিরিয়ে পরও তিনি নির্বিকার। তিনি শুধু বলেন, সরকারের জমি সরকার নিয়েছে।
জলপাইগুড়ি লোকসভা আসনে তৃণমূল (Trinamool Congress) প্রার্থী নির্মল চন্দ্র রায়কে তিনি এগিয়ে রাখতে পারেননি। লোকসভা নির্বাচনে এই ব্যর্থতাকে হাতিয়ার করে এবার বিতর্কিত রঞ্জন শীলশর্মাকেও কি কোনও কোনও তৃণমূল নেতার স্বার্থে ছেটে ফেলা হবে? এ প্রশ্ন দলের অন্দরে। আর এই প্রশ্নেই শিলিগুড়ি পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলররা এখন রীতিমত আতঙ্কে রয়েছেন। কেননা এবারের লোকসভা নির্বাচনে অধিকাংশ কাউন্সিলরই তৃণমূল প্রার্থীকে লিড দিতে পারেননি। আর অনেকের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অনৈতিক কাজের অভিযোগও রয়েছে। ফলে, কার ওপর এবার রোষ পড়ে সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে সকলে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।