"রাজ্যে আরও বেশি করে গবেষণার পরিকাঠামো গড়ে তোলা প্রয়োজন", বললেন দীপ্যমান গঙ্গোপাধ্যায়
দেশের সেরা, কলকাতার চিকিৎসক দীপ্যমান গঙ্গোপাধ্যায়।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চিকিৎসা বিজ্ঞান সংক্রান্ত বিশেষ অবদানের জন্য শান্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার (Shanti Swarup Bhatnagar Prize) পেলেন বাঙালি চিকিৎসক দীপ্যমান গঙ্গোপাধ্যায় (Dipyaman Ganguly)। চার দশক পর বঙ্গের কোনও প্রতিষ্ঠানে কাজ করে বাঙালি হিসেবে এ বছর এই সম্মান পেয়েছেন দীপ্যমান। বাংলায় কাজ করে একমাত্র বাঙালি হিসেবে পুরস্কৃত হওয়ার ক্ষেত্রে মেডিক্যাল সায়েন্স বিভাগে দীর্ঘদিনের খরা কাটিয়েছেন তিনি। তবে এটা শুরু, এখনও অনেক পথ চলা বাকি বলে জানালেন বাঙালি চিকিৎসক-গবেষক।
দীর্ঘদিন ধরেই অনাক্রম্যতা (ইমিউনোলজি) বিষয়ে গবেষণা করছেন দীপ্যমান গঙ্গোপাধ্যায় (Dipyaman Ganguly)। তাতে বিশেষ ভাবে ছিল অটোইমিউন ডিজিজ। সাম্প্রতিক কালে কোভিডে অনাক্রম্যতা বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কী ভাবে প্রভাব ফেলেছিল, সেটি নিয়েও গবেষণা করেন তিনি। করোনাকে হারাতে প্লাজমা থেরাপিকে হাতিয়ার করেছিলেন চিকিৎসকরা। প্লাজমা থেরাপির নেপথ্য কারিগর ছিলেন বাঙালি চিকিৎসক-গবেষক দীপ্যমান গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি এখন ইনস্টিটিউট অফ কেমিক্যাল বায়োলজিতে গবেষণা করছেন। পুরস্কার (Shanti Swarup Bhatnagar Prize) পাওয়া প্রসঙ্গে নির্বিকার দীপ্যমান বলেন, "সম্মান পেয়ে ভাল লাগছে। তবে এখনও বহু পথ চলা বাকি। মানুষের স্বার্থে কাজ করতে চাই। গবেষণা চালিয়ে যাব। আরও বড় কিছুর সন্ধান করাই আমার লক্ষ।"
চিকিৎসা ক্ষেত্রে ১৯৮৫-র পর আর কোনও বাঙালি বাংলায় কাজ করে ভাটনগর পুরস্কার (Shanti Swarup Bhatnagar Prize) পাননি। নিউরোসায়েন্সে অবদানের জন্য সে বছর এই পুরস্কার পেয়েছিলেন ডিকে গঙ্গোপাধ্যায়। তার পর বীরেন্দ্রনাথ মল্লিক (নিউরোবায়োলজি/২০০১), অনিলকুমার মণ্ডল (নিউরো-ফিজিওলজি/২০০৩), মিতালি মুখোপাধ্যায় (গ্লকোমা/২০১০) ও সন্দীপ বসু (হিউম্যান জিনোমিক্স/২০১২) ভাটনগর পুরস্কার পেলেও তাঁরা প্রত্যেকেই রাজ্যের বাইরের প্রতিষ্ঠানে কাজের জন্য স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। ৩৯ বছর পর কলকাতায় কাজ করে মেডিক্যাল সায়েন্সে শান্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার (Shanti Swarup Bhatnagar Prize) পেয়ে দীপ্যমান বলেন, "এত বছর পর মেডিক্যাল সায়েন্সে যে বাংলার প্রাপ্তি হলো, সেটাই আমায় রোমাঞ্চিত করছে। কিন্তু ভাবতে হবে কেন ভিন রাজ্যে রাজ্যের মেধা চলে যাচ্ছে? রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এই রাজ্যে আরও বেশি করে গবেষণার পরিকাঠামো গড়ে তোলা প্রয়োজন।"
আরও পড়ুন: গর্বিত বাংলা! বিজ্ঞান ক্ষেত্রে দেশের সর্বোচ্চ ভাটনগর পুরস্কার পেলেন চার বাঙালি
রহড়া রামকৃষ্ণ মিশনের প্রাক্তনী কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস উত্তীর্ণ হয়েছিলেন দীপ্যমান গঙ্গোপাধ্যায় (Dipyaman Ganguly)। এখন ঢাকুরিয়ায় থাকলেও দীপ্যমানবাবুদের আদি বাড়ি খড়দহের রিজেন্ট পার্কে। প্রায় এক দশক আগে সেখান থেকে সপরিবারে কলকাতায় চলে আসে গঙ্গোপাধ্যায় পরিবার। চিকিৎসক মহলের একটা বড় অংশেরই বক্তব্য, ডাক্তারি পাস করার পরেও ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিসের জৌলুস থেকে নিজেকে দূরে রেখে যে ভাবে এই ইমিউনোলজিস্ট নিরলস গবেষণা করে চলেছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানের একেবারে মৌলিক বিষয়ে, তা কুর্নিশ যোগ্য।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।