গোষ্ঠী কোন্দলের জের! পঞ্চায়েতের সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিতে চান তৃণমূলের প্রধান
পঞ্চায়েত প্রধান (বাঁদিকে), সড়বেড়িয়া-২ পঞ্চায়েত (ডানদিকে) (নিজস্ব চিত্র)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ঘটা করে দলের সিংহভাগ সদস্যের সমর্থন নিয়ে তৃণমূলের প্রধান নির্বাচিত হয়েছিলেন। প্রধান হওয়ার পর থেকে তিনি পঞ্চায়েত অফিসে যেতে পারেননি। এরমধ্যেই তৃণমূলের ওই প্রধানকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের (Paschim Medinipur) দাসপুর-১ নম্বর ব্লকের সরবেড়িয়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের (Paschim Medinipur) সরবেড়িয়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ১৫ টি আসনের মধ্যে ১৫টিতেই জয় লাভ করে শাসক দল তৃণমূল। তবে প্রধান নির্বাচন নিয়ে প্রথম থেকেই কোন্দলে জড়ায় শাসকদলের দুই গোষ্ঠী। দলের তরফে কমল জানা নামে একজন সদস্যের নাম পঞ্চায়েত প্রধান হিসেবে প্রস্তাব করা হলেও সিংহভাগ জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য প্রধান হিসেবে চান কার্তিক চন্দ্র ভূঁইয়াকে। দলের নির্দেশকে কার্যত অমান্য করেই ভোটাভুটিতে অংশ নেন পঞ্চায়েত সদস্যরা। ভোটাভুটিতে কমল জানাকে পিছনে ফেলে প্রধান হন কার্তিক চন্দ্র ভূঁইয়া। তবে, প্রধান পদে নির্বাচিত হলেও নিজেরই দলের বেশ কিছু কর্মীর দাপটে গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রবেশ করতে পারেননি তিনি। অবশেষে রবিবার রাত থেকে শুরু হয় নাটক। ১৭ সেপ্টেম্বর রাত আটটা থেকে হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে যান দাসপুর ১ নম্বর ব্লকের সরবেড়িয়া ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সদ্য নির্বাচিত প্রধান কার্তিকবাবু। প্রধানের অনুগামীদের দাবি, অপহরণ করা হয়েছে তাদের নেতাকে। রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। যদিও রাত ১২টার কিছু পরেই আচমকাই বাড়িতে এসে হাজির হন প্রধান। এই ঘটনার জন্য তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলকে দায়ী করেছে অনেকে।
সরবেড়িয়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কার্তিকবাবু বলেন, কারা আমাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল জানি না। কেন আমাকে কয়েক ঘণ্টা আটকে রাখার পর ছেড়ে দেওয়া হল তা জানি না। আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। তাই, পঞ্চায়েত প্রধান পদ থেকে ইস্তফা দিতে চাই। শুধু তাই নয় পঞ্চায়েত সদস্য পদ থেকেও দিন কয়েকের মধ্যেই ইস্তফা দেব। সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত পঞ্চায়েত প্রধানের এমন দাবিকে ঘিরে রীতিমতো শোরগোল প়ড়েছে এলাকায়।
এই ঘটনাকে ঘিরে রীতিমতো শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপি নেতা কালীপদ সেনগুপ্ত বলেন, শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে সন্ত্রাস থেকে বাদ পড়ছে না দলের নেতারাই। এই ঘটনা তার জ্বলন্ত প্রমাণ। আতঙ্কে ওই প্রধান পঞ্চায়েত সদস্য থেকেও পদত্যাগ করবেন। এই ঘটনা দলের কোন্দল একেবারে প্রকাশ্যে এনে দিল।
যদিও বিজেপির কথাকে তেমন গুরুত্ব দিতে নারাজ শাসক দল তৃণমূল। পশ্চিম মেদিনীপুরের (Paschim Medinipur) ঘাটাল সংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি আশিস হুতাইত বলেন, নিজের ভুল বুঝতে পেরেই পঞ্চায়েত প্রধান পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ভাবনা কার্তিক চন্দ্র ভূঁইয়ার। আর কোনও কারণ নেই। অপহরণের ঘটনাও ঠিক নয়।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।