ইডির তদন্তকারীদের অভিযোগ, লন্ডন নিবাসী রুশ নাগরিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাচার করা হয়েছে দুর্নীতির টাকা
বিদেশে দুর্নীতির টাকা পাচার।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: লন্ডন নিবাসী রুশ বান্ধবীর কাছে দুর্নীতির টাকা (Money Laundering) পাচার করেছেন রাজ্যের এক প্রভাবশালী। গরু, কয়লা পাচার থেকে শুরু করে স্কুলে নিয়োগ— বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতির যে অভিযোগে রাজ্য সরগরম, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির সূত্রে খবর, সেই দুর্নীতির টাকাই হাওয়ালা মারফত পৌঁছেছে ‘প্রভাবশালীর বান্ধবীর’ অ্যাকাউন্টে। সেই সংক্রান্ত নথিপত্র তাদের হাতে রয়েছে বলেও ইডি সূত্রে দাবি।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার খবর অনুযায়ী, এই বিদেশিনী পেশায় ‘মডেল’। লন্ডনের বাসিন্দা। রাজ্যের ওই প্রভাবশালীর এখন তিনি ‘বিশ্বস্ত বান্ধবী’। প্রাথমিক ভাবে ইডির হাতে আসা তথ্য অনুযায়ী, দুর্নীতির টাকা (Money Laundering) হাওয়ালা মারফত প্রথমে পাঠানো হয়েছে পশ্চিম এশিয়ার এক দেশে। সেখানে কয়েকটি ভুয়ো সংস্থা বানিয়ে তাতেই বিনিয়োগ করা হয়েছে ওই টাকা। এ জন্য ওই দেশে খোলা হয়েছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। সেই অ্যাকাউন্ট ঘেঁটেই ইডি সূত্রে দাবি, ভুয়ো সংস্থার টাকার একাংশ গিয়েছে রুশ মডেলের অ্যাকাউন্টেও। তদন্তকারীদের দাবি, শুধু ওই মহিলা নন, তাঁর সহযোগী কয়েক জনের কাছেও দুর্নীতির টাকা পৌঁছেছে। সব মিলিয়ে যার আনুমানিক অঙ্ক ১০০ কোটি টাকার কাছাকাছি বলে প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের ধারণা।
তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এই প্রভাবশালী নেতা, এক হিসাবরক্ষক এবং কয়লা পাচারের মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ও পলাতক বিনয় মিশ্রের দুবাই, লন্ডন এবং আমেরিকায় প্রায়শই যাতায়াত ছিল। ইডি-র দাবি, তখনই ওই মহিলার সঙ্গে তাঁদের পরিচয়। সাবেক সোভিয়েট ইউনিয়ন ভেঙে তৈরি হওয়া বিভিন্ন দেশের অনেক যুবতীই রোজগারের টানে ছড়িয়ে রয়েছেন বহু শহরে। দুবাইয়ে এমন যুবতীর সংখ্যা কম নয়। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, ওই রুশ মহিলাকে নির্দিষ্ট ভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেনের বিষয়ে বিশদে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। ‘প্রভাবশালী’র সঙ্গে ওই মহিলার এখনও নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে বলেও তদন্তকারীদের দাবি।
আরও পড়ুন: চলতি সপ্তাহে ৬৭৫ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত! আজ উত্তাল হতে পারে বিধানসভা
ইডি সূত্রে সরাসরি কারও নাম প্রকাশ করা হয়নি। তবে জানা গিয়েছে, এক সাংসদ, তাঁর হিসাবরক্ষক ও তাঁদের দু’জনের পরিবারের সদস্যদের বিদেশ ভ্রমণের বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। প্রভাবশালীদের বিদেশ যাত্রার অধিকাংশ টিকিট কাটা হয়েছে মধ্য কলকাতার একটি ভ্রমণ সংস্থার মাধ্যমে। সেই সংস্থার অফিসে সম্প্রতি অভিযান চালিয়েছে ইডি। সেখান থেকে বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এদিকে সেই ভ্রমণ সংস্থার দুই অংশীদারকে দিল্লিতে তলব করে জেরা করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, কয়লা পাচারের তদন্তে নেমে ইডি দাবি করেছে, ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত কয়েক হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছিল। বিদেশের সংস্থায় বিনিয়োগ করা হয়েছে সেই টাকা। আবার ঘুর পথে তা দেশে ফিরিয়ে নিয়ে এসে কেনা হয়েছে সম্পত্তি।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।