কালচিনিতে অনাহারে শ্রমিকমৃত্যু! অমানবিক প্রশাসন…
ধানী ওরাওঁয়ের স্ত্রী। সংগৃহীত চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রশাসনের অমানবিক আচরণের কারণেই কি মৃত্যু হল কালিচনি ব্লকের মধু চা বাগানের শ্রমিক ধানী ওরাওঁয়ের? এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে আলিপুরদুয়ারের কালচিনিতে (Alipurduar)। বাগানের শ্রমিকদের অবশ্য দাবি, প্রশাসনের মানবিক হওয়া উচিত ছিল, অত্যন্ত অমানবিক আচরণ করেছে প্রশাসন। গত ২ ফেব্রুয়ারি অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। তবে এখনও তাঁর স্ত্রী আশারানী হাসপাতালে রয়েছেন চিকিৎসায়। তবে মৃত্যুর কারণ নিয়ে প্রশাসন থেকে এখনও কোনও শংসাপত্র দেওয়া হয়নি। উল্লেখ্য ২০০৪ সালের বাম আমলে ঝাড়গ্রামের আমলাশোলে অনাহারে বেশ কিছু শ্রমিকের মৃত্যু ঘটেছিল। এবার এই ঘটনায় ফের অনাহারে ম্রত্যুর ঘটনার পর রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
এলাকার (Alipurduar) মানুষের অভিযোগ, সরকারি কোনও রকম প্রকল্পের সুবিধা পেতেন না ওই দম্পতি। ছিল না কোনও রকম রেশন এবং ভাতা। বাগানের স্থায়ী শ্রমিক হলেও কাজে যেতে পারতেন না ধানী। মজুরি সত্যিই পেতেন কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। বাগানে তাঁদের প্রতিবেশীরা বলেছেন, “ধানীর আধার কার্ড সংক্রান্ত সমস্যা ছিল। আধারের সঙ্গে রেশন কার্ড লিঙ্ক করা ছিল না। অসুস্থ হাওয়ায় তিনি করতে যেতে পারেন নি। ফলে রেশন মিলত না তাঁদের। ফলে রাজ্য প্রশাসনের কোনও সুবিধা পেতেন না তাঁরা।” একই ভাবে পাশের এক শ্রমিক বলেন, “ধানী নিজে অসুস্থ ছিলেন। তাঁর স্ত্রী নিজেও নানান সমস্যায় ভুগছেন। রাজ্য প্রশাসন যদি তাঁদের বাড়িতে গিয়ে এই সব প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দিত, তাহলে এই ভাবে মরতে হত না।”
এলাকায় (Alipurduar) মানুষের আর্থিক অবস্থা বেশ খারাপ। থাকার মতো ঘর নেই। ত্রিপল খাটিয়ে কোনও রকম চলছে দিন। বৃষ্টি এলেই মাথায় হাত। শ্রমিকদের অভিযোগ, দুর্দশার কথা জানালেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও অভিযোগ জানালেও সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়নি। একই ভাবে আমলাশোলের অনেক বাসিন্দা এখনও রেশন পান না। রাজ্য সরকারের নানান ভাতা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। নেতারা এলাকায় আসলে এলাকাবসীরা অভিযোগ জানালে কোনও রকম ভাবে সমস্যার সমাধান ঘটছে না। ২০১১ সালের পর একবার-দুবার কিছু রাজ্য সরকারের সাহায্য এলেও তারপর থেকে কেউ ঘুরেও থাকায় না।
আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) জেলাশাসক আর বিমলা বলেছেন, “অনাহারে মৃত্যুর অভিযোগ ঠিক নয়। মৃতের পরিবার থেকেও এমন অভিযোগ করা হয়নি। বাগানে একাধিকবার শিবির হয়েছে। বাগানে ত্রাণের কাজ করা হয়। শ্রমিকদের সমস্যার কথা শোনা হয়। আধারের সমস্যা দূর করতে ব্লকে দ্রুত শিবির করা হবে।”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।