img

Follow us on

Monday, May 20, 2024

Chennai: চিকিৎসা করাতে এসে প্রণয়, মানসিক হাসপাতালেই সাতপাকে বাঁধা পড়লেন ২ রোগী

মহেন্দ্রনকে সরকারি চাকরিও দিয়েছে তামিলনাড়ু সরকার।

img

চেন্নাই

  2022-10-29 14:16:48

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মন জুড়েছিল আগেই। এবার তা পেল সামাজিক স্বীকৃতি। চেন্নাইয়ের (Chennai) মানসিক হাসপাতালের ২২৮ বছরের ইতিহাসে এই ঘটনা এই প্রথম। বিয়ে হল দুই মানসিক রোগীর। হাসপাতালের এই দুই রোগীকে প্রায়ই দেখা যেত ফাঁকা করিডোরে দাঁড়িয়ে গল্প করতে। ৩৬ বছরের দীপা (Deepa) আর ৪২ এর মহেন্দ্রনকে (Mahendran) ক্যাফেটেরিয়াতেও আড্ডা জমাতে দেখা যেত। অবাক হয়েছিলেন হাসপাতালের কর্মীরা। নালিশ গিয়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে। তাঁদের একে অপরের থেকে দূরে রাখার চেষ্টাতেও কোনও কসুর করেনি হাসপাতালের কর্মীরা। কিন্তু সেই সব চেষ্টাতে জল ঢেলে শুক্রবার সেই দুজনই পাশাপাশি বসলেন বর-কনে হিসেবে। তাঁদের বিয়েতে উপস্থিত থেকে আশীর্বাদ দিলেন সেই হাসপাতালের কর্মীরাই, যারা একদিন এই সম্পর্কের বিরোধীতা করেছিলেন। বিবাহের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তামিলনাড়ুর স্বাস্থ্যমন্ত্রী এমএ সুব্রামনিয়ান। তিনি নব বিবাহিত দম্পতিকে উপহার ভর্তি একটি থালা এবং পবিত্র সুতো উপহার দেন। এদিন অন্যান্য মন্ত্রীদের সঙ্গে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শেখর বাবু এবং সাংসদ দয়ানিধি মারান। 

বিয়ের পর তাঁদের নতুন ঠিকানা হবে ভাড়ায় নেওয়া একটি বাড়ি। অ্যাঁর মানসিক হাসপাতাল নয়, নতুন সেই বাড়িতেই নিজেদের মতো করে জগৎ গড়বেন দীপা-মহেন্দ্রন। মহেন্দ্রনকে সরকারি চাকরিও দিয়েছে তামিলনাড়ু সরকার। চেন্নাইয়ের ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল(IMH)  হেলথে শর্ত সাপেক্ষ কর্মী হিসেবে কাজ করবেন তিনি।

আরও পড়ুন: রেকর্ড পারদ-পতন কলকাতায়! অক্টোবরেই তাপমাত্রা নামল ২০ ডিগ্রির নীচে  

পরিবার সাথ ছেড়েছিল অনেক আগেই। দু বছর আগে মানসিক রোগের চিকিৎসা করতে চেন্নাইয়ের ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল হেল্থ  হাসপাতালে এসেছিলেন দীপা এবং মহেন্দ্রন। তাঁরা নিজেরাও ভাবেননি মনের অসুখের চিকিৎসা করাতে করাতে পেয়ে যাবেন মনের মানুষ। দীপা বলেন, "মহেন্দ্রন যখন আমাকে বিয়ের কথা বলেছিলেন, আমি নিশ্চিত ছিলাম না। উত্তরও দিইনি। ওর প্রস্তাব শোনার পরও বাড়ি ফিরে গিয়েছিলাম। কিন্তু তার পর আবার হাসপাতালেই ফিরতে হল। আমি বুঝতে পারছিলাম, জীবনটা যদি অর্থবহ হয় তবে এই মানুষটার জন্যই হতে পারে। না হলে নয়।" দীপা যখন সংবাদমাধ্যমকে এই কথাগুলো বলছিলেন তখন তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মহেন্দ্রন। গুনগুন করে গাইছিলেন এসপি বালাসুব্রহ্মণ্যমের গান। গান শেষ করে বলেন, "আমরা একটা নতুন জীবন শুরু করতে চলেছি। কিন্তু তোমাকে মনে রাখতে হবে, আমি যদি রেগে যাই বা কখনও বকাবকি করি, তা হলে সেটা তোমার ভালর জন্যই করছি।" মহেন্দ্রন জানান, দীপার মধ্যেই তিনি খুঁজে পেয়েছেন গোটা একটা পরিবার। মা, বোন, প্রিয় বন্ধু মহেন্দ্রনের কাছে সবটাই আজ দীপা।  

চেন্নাইয়ের ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল হেলথে তাঁরা যখন ভর্তি হন, তখন কেউ কাউকে চিনতেন না। কিন্তু পরবর্তী ২ বছর ধরে একটু একটু করে বদল ঘটতে থাকে তাঁদের আচরণে। দুজনের মধ্যে এক নিবিড় সম্পর্ক তৈরি হয়। মহেন্দ্রনের পারিবারিক সম্পত্তিগত কারণে আত্মীয়দের মধ্যে বিবাদ লাগে। তারপরেই ওলটপালট হয়ে যায় তাঁর জীবন। বাবার মৃত্যুশোক গভীরভাবে আঘাত করে দীপাকে। মা ও ছোট বোন থাকা সত্ত্বেও নিজেকে তিনি একা মনে করতে শুরু করেন। আজ আর দুজনেরই ফেরার কোনও জায়গা নেই। গোটা পৃথিবীতে তাঁদের একমাত্র ঠিকানা মানসিক হাসপাতাল। তবে, একে অপরের মধ্যে আশ্রয় খুঁজে পেয়েছেন দীপা-মহেন্দ্রন।

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

Tags:

Chenna

IMH


আরও খবর


খবরের মুভি


ছবিতে খবর