Kathamrita: ঠাকুরের প্রেমমাখা গান শুনিয়া মাস্টারের চক্ষুতে জল আসিয়াছে......কথামৃত' থেকে শুনুন সেই অমৃত বাণী
শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। সংগৃহীত চিত্র।
শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে
প্রথম পরিচ্ছেদ
ভক্তসঙ্গে ভজনানন্দে—রাখালপ্রেম-প্রেমের সুরা
আর এক দিন ঠাকুর নিজের ঘরে ছোট খাটটির উপর বসিয়া আছেন, আনন্দময় মূর্তি—হাস্যবদন। শ্রীযুক্ত কালীকৃষ্ণের (Ramakrishna) সঙ্গে মাস্টার আসিয়া উপস্থিত।
কালীকৃষ্ণ জানিতেন না, তাঁহাকে তাঁহার বন্ধু কোথায় লইয়া আসিতেছেন। বন্ধু বলিয়াছিলেন, শুঁড়ির দোকানে যাবে তো আমার সঙ্গে এস; সেখানে এক জালা মদ আছে। মাস্টার আসিয়া বন্ধুকে যাহা বলিয়াছেন, প্রনামান্তর ঠাকুরকে সমস্ত নিবেদন করিলেন। ঠাকুরও হাসিতে লাগিলেন।
ঠাকুর (Ramakrishna) বলিলেন, ভজানন্দ ব্রহ্মানন্দ, এই আনন্দই সুরা। মানবজীবনের উদ্দেশ্য ঈশ্বরে প্রেম, ঈশ্বরকে ভালোবাসা। ভক্তিই সার, জ্ঞানবিচার করে ঈশ্বরকে জানা বড়ই কঠিন। এই বলিয়া ঠাকুর গান গাহিতে লাগিলেনঃ
কে জানে কালী কেমন, ষড় দর্শনে না পায় দরশন
আত্মারামের আত্মা কালী প্রমাণ প্রণবের মতন,
সে যে ঘটে ঘটে বিরাজ করে ইচ্ছাময়ীর ইচ্ছা যেমন।
কালীর উদরে ব্রহ্মাণ্ড ভাণ্ড প্রকাণ্ড তা বুঝ কেমন!
মূলাধারে সহস্রারে সদা যোগী করে মনন
কালী পদ্মবনে হংস-সনে, হংসীরূপে করে রমণ।
প্রসাদ ভাষে, লোকে হাসে, সন্তরণে সিন্ধু-তরণ,
আমার মন বুঝেছে, প্রাণ বুঝে না, ধরবে শশী হয়ে বামন।
ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) আবার বলিতেছেন, ঈশ্বরকে ভালবাসা—এটিই জীবনের উদ্দেশ্য; যেমন বৃন্দাবনে গোপ-গোপীরা, রাখালরা শ্রীকৃষ্ণকে ভালবাসত। যখন শ্রীকৃষ্ণ মথুরায় গেলেন, রাখালেরা তাঁর বিরহে কেঁদে কেঁদে বেড়াত।
এই বলিয়া ঠাকুর উর্ধবদৃষ্টি হইয়া গান গাহিতেছেনঃ
দেখে এলাম এক নবীন রাখাল,
নবীন তরুর ডাল ধরে,
নবীন বৎস কোলে করে
বলে, কোথা রে ভাই কানাই।
আবার, কা বই কানাই বেরোয় না রে,
বলে কোথা রে ভাই
আর নয়ন-জলে ভেসে যায়।
ঠাকুরের প্রেমমাখা গান শুনিয়া মাস্টারের চক্ষুতে জল আসিয়াছে।
আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির..”
আরও পড়ুনঃ "দু-চারটা মাছ এমন সেয়ানা যে, কখনও জালে পড়ে না"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।