img

Follow us on

Sunday, Apr 28, 2024

Heritage Building: হাওড়ায় শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি যেন আস্ত সংগ্রহশালা

চলুন ঘুরে আসি কথা সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে

img

এই সেই শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি। নিজস্ব চিত্র

  2023-08-07 18:31:36

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অমর কথা সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা একটিও গল্প বা উপন্যাস পড়েননি, এমন বাঙালি বোধহয় বিরল। হুগলির দেবানন্দপুর, পরে বিহারের ভাগলপুর, সাবেক বার্মা অধূনা মায়ানমার, হাওড়া শহরের বাজেশিবপুর ইত্যাদি জায়গায় থেকেছেন শরৎবাবু। তবে তাঁর শেষ জীবনের আবাসস্থল হাওড়া জেলার পশ্চিম সীমান্তের গ্রাম সামতাবেড় (Heritage Building)। ১৯২৬ থেকে ১৯৩৮, প্রায় বারো বছর তিনি কাটিয়েছিলেন নিজের কেনা এই বাড়িটিতে। জীবনের শেষ উপন্যাস বিপ্রদাস লিখেছিলেন এখানে বসেই।

স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি (Heritage Building) দেখতে আসেন বহু মানুষ

প্রচুর মানুষ এখানে আসেন তাঁর স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটি দেখতে। দেখতে আসেন বহু কালজয়ী গল্প-উপন্যাসের স্রষ্টার সাধনস্থল। ২০০৭ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার হেরিটেজ অ্যাক্ট আইন অনুসারে এটিকে ঐতিহ্য ভবন (Heritage Building) ঘোষণা করে। অমর কথা সাহিত্যিকের আবক্ষ মূর্তি উদ্বোধন করেন তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত। লাল টালিতে ছাওয়া দোতলা বার্মিজ প্যাটার্নের বাড়িটি তাঁর বার্মাতে থাকার কথা মনে করিয়ে দেয়। নিস্তব্ধ পরিবেশ যেন মন কেমনের অনুভূতি বহন করে। নীরব গাম্ভীর্য সমীহ আদায় করে নেয়। অনতিদূরেই রূপনারায়ণ নদীর তীর বেড়ানোর পক্ষে আদর্শ। কলকাতা বা অন্যান্য জায়গা থেকে অনেকেই আসেন এখানে পিকনিক করতে। মানুষ আসেন ঢিল ছোড়া দূরত্বে রূপনারায়ন নদীর তীরের পিকনিক স্পটে। এপারে হাওড়া ওপারে মেদিনীপুর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বছর জানুয়ারিতে শুরু হয় শরৎ মেলা। পানিত্রাস স্কুল মাঠে চলে এক সপ্তাহ ধরে।

কীভাবে যাবেন?

হাওড়া স্টেশন থেকে দক্ষিণ পূর্ব রেলপথে হাওড়া-খড়্গপুর শাখার দেউলটি স্টেশন থেকে মাত্র পনেরো-কুড়ি মিনিটের পথ সামতাবেড়। সরাসরি গাড়িতে করেও আসা যায়। সাঁতরাগাছি হয়ে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে। এ পথে টোটো চলে বেশি। স্টেশন থেকে টোটো বুকিং করেও আসা যায়। ঘুরে আসা যায় কাছাকাছি নাউপালা বাংলো। স্থানীয় মানুষের মুখে মুখে শরৎবাবুর বাড়ি শরৎ কুঠী (Heritage Building) বলেই পরিচিত হয়ে গিয়েছে। পানিত্রাস রোড হয়ে পঞ্চায়েতের বানানো ঢালাই রাস্তা ধরে মিনিট পাঁচেক গেলেই শরৎচন্দ্রের বাড়ি।

গড়ে উঠেছে সংগ্রহশালা

ব্যক্তিগত উদ্যোগে শরৎচন্দ্রের ব্যবহৃত জিনিসপত্র নিয়ে একটি সংগ্রহশালা গড়ে উঠেছে এখানে। সাধারণত সকাল ৭টা থেকে ১২টা ও বিকেল ৪টে থেকে ৫.৩০ পর্যন্ত বাড়িটি সাধারণের জন্য খোলা থাকে। এখানে রয়েছে শরৎচন্দ্রের ব্যবহৃত বুক সেলফ, খাট, আরাম কেদারা, গড়গড়া, ভালভ্ সিস্টেম রেডিও, দেওয়াল ঘড়ি, রাধাকৃষ্ণের মূর্তি প্রভৃতি। রয়েছে হোমিওপ্যাথি ওষুধের শিশি যা তিনি গরীব মানুষের অসুখ-বিসুখে দিতেন। সবই বেশ ঝকঝকে তকতকে অবস্থায় রয়েছে। আর রয়েছে রোমাঞ্চকর অনুভূতি জাগানো সেই টেবিল ও চেয়ার। যেখানে বসেই সৃষ্টি হয়েছে মর্মস্পর্শী সাহিত্যের মণিমাণিক্য মহেশ, অভাগীর স্বর্গ, পল্লিসমাজ প্রভৃতি। বাড়ির ভিতরে তাঁর নিজের হাতে লাগানো পেয়ারা গাছ ও উল্টো দিকের জল টলটলে দিঘিটি হলো রামের সুমতির পটভূমি। গল্প অনুযায়ী রামের অতি প্রিয় এই গাছটি ও কার্তিক গণেশ খ্যাত দিঘির মাছ দুটির স্মৃতি যেন বইয়ের পাতা থেকে বাস্তবে উঠে আসে। পল্লিসমাজের রমেশ, রমা প্রভৃতি চরিত্রগুলি আজও যেন হেঁটে চলে ফেরে এখানে। স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গেও এই বাড়িটি (Heritage Building) জড়িয়ে রয়েছে। পরাধীন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অন্যতম আশ্রয়স্থল ছিল এই বাড়ি। এখানে একসময় এসেছেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন, বিপিনবিহারী গাঙ্গুলী, বাঘাযতীন প্রমুখ।

সময় বের করে যাওয়াই যায়

শহর কলকাতার যান্ত্রিক জীবন থেকে একটু সময় বের করে আসাই যায় সামতাবেড় (Heritage Building)। খানিকটা গ্রাম্য পরিবেশ, সবুজের সমারোহ, নদীর ধার ভালোই লাগবে। মনে সাহিত্য ভাবনা না এলেও এক অন্য অনুভূতি যে হবেই তা হলফ করে বলা যায়। আর শরৎচন্দ্রের বাড়ি এলে তো নিজেকে হারিয়ে ফেলাই হবে! একটু অনিয়ম হবে? হোক না! শ্রীকান্তরা কোনকালেই বা নিয়ম মেনে চলতে চেয়েছে? শ্রীকান্তরা যে চিরকালের মূর্তিমান অনিয়ম!

 

দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Tags:

Madhyom

bangla news

Bengali news

sarat chandra chattopadhyay

samtaber howrah

heritage building


আরও খবর


খবরের মুভি