img

Follow us on

Monday, May 20, 2024

Durga Puja: এই রাজাই বাংলাতে প্রথম দুর্গাপুজো শুরু করেছিলেন! জানেন তিনি কে?

বলিপুরের  রাজা সুরথ বাংলাতে প্রথম দুর্গাপুজোর শুরু করেন। বলিপুর মানে বর্তমানে বীরভূম জেলার বোলপুর শহরের কথাই বলা হয়েছে , পুরাণে।

img

দেবী দুর্গা।

  2022-10-01 14:48:18

শুভ্র চট্টোপাধ্যায়: প্রতিবছর ধুমধাম করে সাড়ম্বরে পালিত হয় দুর্গাপুজো (Durga Puja)। শরৎ কালের শিউলি ফুলের গন্ধ বাতাসে বার্তা ভাসিয়ে দেয় মা আসছে। পুজো মানে নতুন পোশাক, পুজো মানে নাড়কেলের তৈরী নাড়ু, প্রতিমা দর্শন, অষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলি, খাওয়াদাওয়া, বন্ধুদের সাথে আড্ডা। বছরের বাকি ৩৬১টা দিন বাঙালিরা অপেক্ষা করে থাকে পুজোর চারটে দিনের জন্য। দেশ বিদেশের আপামর বাঙালির এই প্রধান উৎসব আজ স্থান পেয়েছে ইউনেস্কোর হেরিটেজ লিস্টে (Unesco)। তবে জানেন কি বাংলাতে এই দুর্গাপুজো কে শুরু করেছিলেন ?

পুরাণ মতে, বলিপুরের  রাজা সুরথ বাংলাতে প্রথম দুর্গাপুজোর শুরু করেন। বলিপুর মানে বর্তমানে বীরভূম জেলার বোলপুর শহরের কথাই বলা হয়েছে , পুরাণে। এই বলিপুর বা বোলপুর ছিল রাজা সুরথের রাজধানী‌‌। মার্কন্ডেয় পুরাণ অনুযায়ী, মর্ত্যলোকের এই  রাজা মর্ত্যবাসীদের মধ্যে দেবী মাহাত্ম্য তথা দেবীর লীলা  প্রচার করেছিলেন। তিনিই ছিলেন বাংলার সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোর প্রথম উদ্যোক্তা এবং প্রথম সংগঠক। এবার আসুন জেনে নেওয়া যাক, কোন পরিস্থিতিতে, কেন রাজা সুরথ দুর্গা পুজো শুরু করেন? এবং কোথায় শুরু করেন ? 

দেবী মাহাত্ম্যে এবং মার্কন্ডেয় পুরাণে রাজা সুরথ কে চিত্রগুপ্ত বংশীয় রাজা অর্থাৎ চিত্রগুপ্তের বংশধর হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি তাঁর রাজত্ব, সম্পত্তি সবকিছুই হারিয়েছিলেন। দাস দাসী, আত্মীয় স্বজন, তাঁর পোষ্য জন্তু জানোয়ারদের কাছেও তিনি মর্যাদা হারিয়েছিলেন বলে জানা যায়। এরা কেউ তাঁর কথা শুনতো না। অসহায় রাজা মনের দুঃখে রাজ্য ছাড়েন। যদুবংশীয় এই রাজা বৈরাগী হয়েছিলেন। রাজ্য ছাড়ার পর তাঁর সাথে সাক্ষাৎ হয় এক বণিকের । ওই বণিকও ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন, একেবারে দেউলিয়া ছিলেন তিনি। বণিকের নাম ছিল সমাধি বৈশ্য। তাঁর নিজের পরিবার, আত্মীয় স্বজনের প্রতারণার জন্যই তিনি দেউলিয়া হয়েছিলেন বলে পুরাণে জানা যায়। একদিকে এক ভাগ্যহীন রাজা অন্যদিকে এক ভাগ্যহীন বণিক। দুজনের সাক্ষাৎ যেন দৈব নির্ধারিত ছিল। তাঁদের সাথে যোগাযোগ হয় মেধস মুনির। এই মেধস মুনির আশ্রম অবশ্য প্রকৃত পক্ষে কোথায়, সেটা নিয়ে বিভিন্ন পন্ডিতের বিভিন্ন মত রয়েছে।

আরও পড়ুন: মহা ষষ্ঠীতে পূজিতা হন দেবী কাত্যায়নী! জানেন ঋষি কাত্যায়ন কন্যার 'মহিষাসুরমর্দিনী' হয়ে ওঠার কাহিনী?

একটি মত অনুযায়ী, মেধস মুনির আশ্রম বর্তমান বাংলাদেশের চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার করলডাঙা পাহাড়ে অবস্থিত। বাংলাদেশের হিন্দুদের পবিত্র তীর্থস্থান হলো এই পাহাড়ের উপর অবস্থিত মেধস মুনির আশ্রম । প্রতিবছর দুর্গাপুজো তে ভক্তদের ভিড়ে ঠাসা থাকে এই আশ্রম। শিব মন্দির, চন্ডী মন্দির সমেত অনেক গুলি মন্দির রয়েছে এখানে। প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সৈন্যরা এই আশ্রম কে ভেঙে দেয়। পরবর্তীকালে এই আশ্রম পুনঃ প্রতিষ্ঠা করা হয়। বাংলাদেশে হিন্দুদের অন্যতম বড়ো এই তীর্থস্থান থেকেই বাঙালির সবথেকে বড় উৎসব দুর্গাপুজো শুরু হয়েছিল বলে স্থানীয়দের বিশ্বাস। অপর একটি মত অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুর শহরের কাছে গড় জঙ্গল নামক স্থানে ছিল মেধস মুনির আশ্রম‌। আশ্রমের অবস্থান নিয়ে পন্ডিতদের মধ্যে দ্বিমত আছে তবে এই মেধস মুনির আশ্রমেই যে দুর্গা পুজো প্রথম শুরু হয়েছিল এতে পন্ডিত থেকে ঐতিহাসিক সকলেই একমত।

আরও পড়ুন: মহা পঞ্চমীর মাহাত্ম্য: জানুন তারকাসুর বধ ও স্কন্দমাতার আখ্যান

রাজা সুরথ এবং বণিক সমাধি বৈশ্য দুজনে মেধস মুনির শরণাপন্ন হয়ে নিজেদের ভাগ্য বিপর্যয়ের কথা মুনিকে শোনাতে থাকেন। মেধস মুনি তাঁদের দেবী মাহাত্ম্য শোনান। মহিষাসুরমর্দিনীর স্তব করে শোনান। মুনি পরামর্শ দেন, একমাত্র দুর্গতিনাশিনী মা দুর্গার আরাধনা এবং পুজো করলেই তাঁদের ভাগ্য ফিরবে। মুনির পরামর্শ মতো রাজা সুরথ ও বণিক সমাধি বৈশ্য মাটির প্রতিমা নির্মাণ করে ওই আশ্রমেই দুর্গাপুজো করেন। কথিত আছে মাতৃ আরাধনার পর রাজা সুরথ তাঁর রাজত্ব পুনরায় ফেরত পেয়েছিলেন, পরিবার পরিজনের কাছে তাঁর মর্যাদা পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। অপরদিকে বণিক সমাধি বৈশ্যও একই ভাবে সৌভাগ্যের অধিকারী হয়ে, হারানো সমস্ত কিছু ফেরত পেয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার মেধস মুনির আশ্রমে এই পুজো বসন্ত কালে সংঘটিত হয়েছিল। শরৎকালের দুর্গাপুজো শ্রী রামচন্দ্রের অকাল বোধনের কারণে হয়।

Tags:

Durga Puja

Durga puja 2022

who started Durga Puja autumn festival in bengal


আরও খবর


খবরের মুভি