Kathamrita: “বিষয় বুদ্ধির লেশমাত্র থাকলে এই ব্রহ্মজ্ঞান হয় না”……‘কথামৃত’ থেকে শুনুন সেই অমৃত বাণী
শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। সংগৃহীত চিত্র।
চতুর্থ অধ্যায়
জ্ঞান ও বিজ্ঞান, অদ্বৈতবাদ, বিশিষ্টাদ্বৈতবাদ ও দ্বৈতবাদ—এই তিনের সমন্বয়—Reconciliation of Non-Dualism, Quqlity Non-Dualism.
শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—ঋষিদের ব্রহ্মজ্ঞান হয়েছিল। বিষয় বুদ্ধির লেশমাত্র থাকলে এই ব্রহ্মজ্ঞান হয় না। ঋষিরা কত খাটত। সকাল বেলা আশ্রম থেকে চলে যেত। একলা সমস্ত দিন ধ্যান চিন্তা করত, রাত্রে আশ্রমে ফিরে এসে কিছু ফলমূল খেত। দেখা, শুনা, ছোঁয়া—এ-সবের বিষয় থেকে মনকে আলাদা রাখত, তবে ব্রহ্মকে বোধ বোধ করত।
কলিতে অন্নগত প্রাণ, দেহবুদ্ধি যায় না। এ-অবস্থায় সোহহং বলা ভাল নয়। সবই করা যাচ্ছে, আবার আমিই ব্রহ্ম বলা ঠিক নয়। যারা বিষয় ত্যাগ করতে পারে না, যাদের ‘আমি’ কোন মতে যাচ্ছে না, তাদের আমি দাস আমি ভক্ত এ-অভিমান ভাল। ভক্তিপথে থাকলেও তাঁকে পাওয়া যায়।
জ্ঞানী ‘নেতি’ ‘নেতি’ করে বিষয়বুদ্ধ ত্যাগ করে, তবে ব্রহ্মকে (Ramakrishna) জানতে পারে। যেমন সিঁড়ির ধাপ ছড়িয়ে ছড়িয়ে ছাদে পৌঁছানো যায়। কিন্তু বিজ্ঞানী যিনি বিশেষরূপে তাঁর সঙ্গে আলাপ করেন তিনি আরও কিছু দর্শন করেন। তিনি দেখেন, ছাদ যে জিনিসে তৈয়ারি—সেই ইঁট, চুন, সুরকিতেই সিঁড়িও তৈয়ারি। নেতি নেতি করে যাঁকে ব্রহ্ম বলে বোধ হয়েছে তিনিই জীবজগৎ হয়েছেন। বিজ্ঞানী দেখে, যিনি নির্গুণ, তিনিই সগুণ।
ছাদে অনেকক্ষুণ লোক থাকতে পারে না, আবার নেমে আসে। যাঁরা সমাধিস্থ হয়ে ব্রহ্মদর্শন করেছেন। তাঁরাও নেমে এসে দেখেন যে, জীবজগৎ তিনিই হয়েছেন। সা, রে, গা, মা, পা, ধা, নি। নি-তে অনেকক্ষুণ থাকা যায় না। আমি যায় না; তখন দেখে, তিনিই আমি, তিনিই জীবজগৎ সব। এরই নাম বিজ্ঞান।
আরও পড়ুনঃ “পুকুরে কলসীতে জল ভরবার সময় ভকভক শব্দ হয়, পূর্ণ হয়ে গেলে আর শব্দ হয় না”
আরও পড়ুনঃ “সাপের ভিতরে বিষ আছে, অন্যকে কামড়ালে মরে যায়, সাপের কিন্তু কিছু হয় না।
আরও পড়ুনঃ “বিদ্যাসাগরের অনেক গুণ...দয়া সর্বজীবে, বিদ্যাসাগর দয়ার সাগর”
আরও পড়ুনঃ “দক্ষিণেশ্বরের পরমহংস সামান্য নহেন, এক্ষণে পৃথিবীর মধ্যে এত বড় লোক কেহ নাই”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।