Military Exercises: চিন সীমান্তে ভারতীয় স্থল ও বায়ু সেনার যৌথ মহড়া

মার্চের গোড়ায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা ঘেঁষে হওয়া ‘বায়ু বিহার’ সামরিক মহড়ার এক মাসের মধ্যেই ফের চিন সীমান্তের কাছে বড়সড় যুদ্ধ-অনুশীলন করল ভারত। এই অনুশীলনে যৌথভাবে অংশ নেয় সামরিক বাহিনীর দুটি বিভাগ— স্থল ও বায়ুসেনা।

চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে হওয়া এই মহড়ার মূল লক্ষ্য ছিল পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তে (পড়তে হবে চিন সীমান্তে) সেনার স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সের মাল্টি-মোড ইনশার্টশান। অর্থাৎ, যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে প্রয়োজনে কীভাবে সেনার বিশেষ বাহিনীকে বিভিন্ন পন্থা ও উপায়ে দ্রুত কৌশলগত সুবিধাজনক অবস্থানে বা জায়গায় প্রতিস্থাপন করে প্রতিপক্ষের ওপর অ্যাডভান্টেজ বা অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করা যায়— তা এই মহড়ার মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হয়।

এবারের মহড়ায় স্পেশাল ফোর্স বা কমান্ডো বাহিনীকে বায়ুসেনার ট্যাকটিক্যাল বা কৌশল রূপায়ণের কাজে পারদর্শী যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টারের মাধ্যমে কীভাবে কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দ্রুত প্রতিস্থাপন করা বা সেখান থেকে সরিয়ে আনা যেতে পারে, তাও খাতায় কলমে করে দেখা হয়।

দীর্ঘদিন ধরে, ডোকলামে মুখোমুখি সংঘাতের পরিস্থিতি রয়েছে ভারতীয় ও চিনা পিএলএ সেনার মধ্যে। উত্তরবঙ্গের চিকেন’স নেক-এর কাছে ভারত, ভুটান ও চিন-নিয়ন্ত্রিত তিব্বতের সংযোগস্থলে অবস্থিত ডোকলাম কৌশলগতভাবে ভীষণই গুরুত্বপূর্ণ। তার ওপর অরুণাচলেও চিনা আগ্রাসন প্রত্যক্ষ করা গিয়েছে সাম্প্রতিক অতীতে।

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর বিশেষ করে অরুণাচল সেক্টরে, শুধুমাত্র যে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করেই ক্ষান্ত থেকেছে চিন, এমনটা নয়। বারবার সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা চালিয়ে গেছে চিনা সেনা। সম্প্রতি, অরুণাচলের বেশ কয়েকটি জায়গার নাম বদলে তাকে তিব্বতের অংশ বলে দাবি করেছে বেজিং।

এই পরিস্থিতিতে এই মহড়া অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় যে কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে প্রস্তুত ভারতের স্থল ও বায়ুসেনা। তারই সমন্বয়ের অঙ্গ হিসেবে এই সামরিক মহড়ার গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

এই মহড়ায় অংশ নিয়েছিল সামরিক বাহিনীতে বাছাই করা, বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও বিশেষ অস্ত্রে সজ্জিত ইউনিটগুলি। এই মহড়ায় অংশ নিয়েছিল সেনার পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অন্তর্গত ১৭ কোর, যার পোশাকি নাম ‘ব্রহ্মাস্ত্র’। অংশ নিয়েছিল সেনার বিশেষ প্রশিক্ষিত শত্রুজিৎ ব্রিগেডের কমান্ডোরা। অতীতে চিনা সেনার সঙ্গে হাতাহাতির বিষয়টি মাথায় রেখে মহড়ায় প্রচলিত সামরিক পন্থা অবলম্বনের পাশাপাশি, অপ্রচলিত পন্থারও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।

মহড়ার অঙ্গ হিসেবে ভারতীয় বায়ুসেনার সি-১৭ গ্লোবমাস্টার দীর্ঘকায় পণ্যবাহী বিমান এবং চিনুক ও মি-১৭ ভি-৫ হেলিকপ্টারের মাধ্যমে নির্দিষ্ট জায়গায় বাহিনীকে প্রতিস্থাপন করা হয়। শত্রুজিৎ ব্রিগেডের প্যারা কমান্ডোরা বিশেষ হেলিকপ্টার অভিযানে অংশ নেন।

সেনার এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, চিনের সঙ্গে সামরিক সংঘাত চায় না ভারত। তবে, বার্তা পাঠানো জরুরি। আর সেই বার্তা হল— ওপার থেকে কোনও ক্রিয়া হলে, ভারত চুপ করে বসে থাকবে না। পাল্টা প্রতিক্রিয়া পাঠানো হবে।
Tags: