অপূর্ব টেরাকোটার কাজ আর শ্রীরামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের স্মৃতি বিজড়িত আঁটপুর...
স্বামী বিবেকানন্দের স্মৃতি বিজড়িত এই সেই ধুনি মন্দির। ফাইল চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এক সময় এই অঞ্চলের নাম ছিল "বিষখালি"। তৎকালীন বর্ধমান জেলার রেসিডেন্সির দেওয়ান আঁটর খাঁ-র নামে এই প্রাচীন জনপদের নতুন নামকরণ করা হয় "আঁটপুর" (Antpur)।বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরের মতোই টেরাকোটার শিল্পশৈলীতে গড়া মন্দিরের জন্য বিখ্যাত এই আঁটপুর। এই মন্দিরগুলির মধ্যে সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য হল রাধাগোবিন্দ জিউ-এর মন্দির। ১৭৮৬-১৭৮৭ সালে বর্ধমানের মহারাজের দেওয়ান কৃষ্ণরাম মিত্র এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন। ১০০ ফুট উচ্চতার চারচালার ছাদ ও চারটি খিলানযুক্ত স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে থাকা মন্দিরটির সর্বত্র টেরাকোটার অপূর্ব শিল্পকর্ম রয়েছে। গর্ভগৃহে রয়েছে কষ্টি পাথরের শ্রীকৃষ্ণ মূর্তি। মন্দিরটির চারকোণা গম্বুজ আকৃতির। দোলমঞ্চটিও অসাধারণ শিল্পসমৃদ্ধ।
বিবেকানন্দের স্মৃতিধন্য ধুনি মন্দির (Antpur)
এই মন্দিরের কাছেই বাণেশ্বর, জলেশ্বর, ফুলেশ্বর, রামেশ্বর মন্দির। সবকটিতেই রয়েছে অপূর্ব সুন্দর টেরাকোটার কাজ। এর কাছেই সারদা ভবন। আছে শ্রীরামকৃষ্ণ এবং মা সারদার স্মৃতি বিজড়িত এবং শ্রীরামকৃষ্ণর সাক্ষাৎ পার্ষদ স্বামী প্রেমানন্দ, অর্থাৎ বাবুরাম ঘোষেদের দুর্গাবাড়ি। স্বামী বিবেকানন্দের সঙ্গে তাঁর আট গুরুভাই এখানেই গৃহত্যাগ করে সন্ন্যাসের জন্য শপথ গ্রহণ করেন। সেই ঘটনাকে স্মরণ করে এখানে গড়ে উঠেছে ধুনি মন্দির। এক যাত্রাতেই দেখে নেওয়া যায় গৌড়ীয় বৈষ্ণব তীর্থ দ্বাদশ গোপালের অন্যতম পরমেশ্বর দাস ঠাকুরের শ্রীপাট আনরবাটি। মন্দিরে নিত্যানন্দ প্রভুর সেবিত খড়দহের আদি শ্রী শ্রী শ্যামসুন্দরের বিগ্রহ পূজিত হচ্ছেন। রাধাকৃষ্ণ ও বলরাম রূপে পূজিত হচ্ছেন শ্রী চৈতন্য এবং নিত্যানন্দ মহাপ্রভু। আছে প্রায় ৩০০ বছরেরও বেশি প্রাচীন একটি বকুল গাছ। হাতে সময় থাকলে দেখে নেওয়া যায় আঁটপুর (Antpur) থেকে ৬ কিমি দূরে রাজবলহাটে ১৭২৪ সালে নির্মিত আটচালা বিশিষ্ট রাধাকান্ত মন্দির, কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মভিটে প্রভৃতিও। এখানকার রাজবল্লভী মা তো খুবই জাগ্রত।
কীভাবে যাবেন? (Antpur)
আঁটপুর যাওয়ার জন্য হাওড়া স্টেশন থেকে তারকেশ্বর লোকাল ট্রেনে এসে নামতে হবে হরিপাল স্টেশনে। হরিপাল থেকে বাসে বা গাড়িতে মিনিট ৩০-৪০ এর পথ আঁটপুর। হাওড়া থেকে বাসে জাঙ্গিপাড়া এসে সেখান থেকে রিকশাতেও আসা যায় আঁটপুর (Antpur)। আর আঁটপুর থেকে বাসে বা গাড়িতে মিনিট পনেরোর পথ রাজবলহাট। কলকাতা থেকে সকালে বেরিয়ে সারাদিন আঁটপুর ঘুরে আবার সন্ধ্যার মধ্যেই ফিরে আসা যায় কলকাতায় ।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।