North Bengal Medical: 'উত্তরবঙ্গ লবি'র অন্যতম মাথা সুশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ রয়েছে?
চিকিৎসক সুশান্ত রায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করল সিবিআই (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আরজি কর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের মামলার তদন্তে এবার সিবিআইয়ের (CBI) স্ক্যানারে তথাকথিত 'উত্তরবঙ্গ লবি'র অন্যতম মাথা চিকিৎসক সুশান্ত রায়। সূত্রের খবর, গত ৯ অগাস্ট ঘটনার দিন আরজি কর হাসপাতালের অকুস্থলে দেখা গিয়েছিল জলপাইগুড়ির ওই চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞকে। কেন তিনি সে দিন হঠাৎ আরজি করে পৌঁছলেন, কার কাছ থেকে তিনি ঘটনার খবর পেয়েছিলেন। অকুস্থল থেকে তথ্যপ্রমাণ লোপাট, হাসপাতালে থ্রেট সিন্ডিকেট চালানো, ষড়যন্ত্রের মতো একাধিক অভিযোগ আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা তুলেছেন সুশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে। সে বিষয়ে তিনি কিছু জানেন কি না, তা নিয়ে সুশান্তর সঙ্গে ঘণ্টা পাঁচেক কথা বলেন তদন্তকারীরা। সুশান্ত রায়কে সিবিআই জেরা করায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে (North Bengal Medical) আন্দোলনকারীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস।
জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশের বক্তব্য, ২০১১ সালের আগে জলপাইগুড়ির বাইরে সুশান্তর তেমন পরিচিতি ছিল না। ২০১৬ সাল থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের (North Bengal Medical) প্রশাসনে সুশান্তর প্রভাব বাড়তে শুরু করে। কোভিডকালে তিনি উত্তরবঙ্গের করোনা প্রতিরোধ টিমের ওএসডি পদে নিযুক্ত হন সরকারিভাবে। এরপরই তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।
আরও পড়ুন: পুজোর মুখে পর পর বন্ধ হচ্ছে জুটমিল! কর্মহীন কয়েক হাজার, হেলদোল নেই মমতা-সরকারের
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের (North Bengal Medical) প্রধান করণিক উৎপল সরকার বলেন, ‘‘নিজের ছেলে সৌত্রিক রায়ের নাম থাকা একটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত করে কোভিডকালে স্যানিটাইজার, মাস্ক, পিপিই সহ যাবতীয় জিনিস সেখান থেকে কিনে মোটা টাকা আত্মসাত করেছেন সুশান্ত রায়।’’ হাসপাতালের অধ্যাপক চিকিৎসক উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কোভিড কালে ডাক্তার ও নার্সদের কোয়ারান্টাইনে থাকার জন্য হোটেল, খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে যাবতীয় খরচের ক্ষেত্রে সুশান্ত রায় ব্যাপক দুর্নীতি করেছেন।’’ উত্তরবঙ্গের আরও এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে কোয়ালিটি কন্ট্রোল এক কোটি টাকা ঠিক মতো ব্যবহার হয়নি। ব্লাড গ্রুপের একটি স্টিকার তৈরিতে খরচ দু'টাকা। সেখানে তিনি ৯০ টাকা করে বিল করেছিলেন। ভারপ্রাপ্ত এক আধিকারিক এর প্রতিবাদ করে ওই বিলে সই করেননি। প্রভাব খাটিয়ে সুশান্ত রায় তাঁকে কিছুদিনের মধ্য বদলি করে দেন। সেই চেয়ারে পছন্দের আধিকারিককে বসিয়েছে ওই বিল পাস করিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা তিনি আত্মসাৎ করেন। তার পরপরই তিনি একই সঙ্গে দুটি দামি গাড়ি কেনেন। যার একটি নগদে কেনেন। এত টাকা তিনি কোথায় থেকে পেলেন? এনিয়েও তদন্ত (CBI) হওয়া দরকার।’’
আরও পড়ুন: পুজোর মুখে পর পর বন্ধ হচ্ছে জুটমিল! কর্মহীন কয়েক হাজার, হেলদোল নেই মমতা-সরকারের
সিবিআইয়ের তলব পেয়ে বুধবার বেলা দেড়টা নাগাদ সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছন সুশান্ত। সংবাদমাধ্যমকে এড়াতে সিজিও কমপ্লেক্সের পিছনের গেট দিয়ে ঢোকেন তিনি। স্বাস্থ্য মহলের অভিযোগ, সুশান্তর প্রশ্রয়েই আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের রমরমা। আরজি করের ঘটনা সামনে আসার পরে নিখোঁজ পোস্টারও পড়েছিল সুশান্তর নামে। এর আগে আরজি করের ক্রাইম সিনে থাকা 'উত্তরবঙ্গ লবি'র (North Bengal Medical) ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত বিতর্কিত চিকিৎসক অভীক দে, বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। পিছনের গেট দিয়ে ঢোকায় এ দিন অবশ্য সিজিওতে ঢোকার সময়ে সুশান্তের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। বেরোনোর সময়েও তিনি সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে যান।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।