ASI: ত্রয়োদশ শতাব্দীতে নির্মিত কোনার্ক সূর্য মন্দির সংরক্ষণে জোর প্রত্নতত্ত্ববিদদের…
কোনার্কের সূর্য মন্দির। সংগৃহীত চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ত্রয়োদশ শতাব্দীতে নির্মিত পুরীর বিখ্যাত কোনার্ক সূর্য মন্দিরের (Konark Sun Temple) গর্ভগৃহে ভরে যাওয়া বালি সরানোর কাজ শুরু করেছে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। সেই কাজের কতটা অগ্রগতি হল, তার মূল্যায়ন করতে মন্দির পরিদর্শন করল আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (এএসআই)-র ছয় সদস্যের একটি দল। সংস্থার অতিরিক্ত মহানির্দেশক জানভিজ শর্মার নেতৃত্বে এই দলটি (ASI) বিশ্ব ঐতিহ্যের স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে গণ্য এই মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে বিশেষ পর্যালোচনা করেছে। মন্দিরের স্থাপত্যে গর্ত দেখা দিলে এক সময় বালি দিয়ে তা ভরাট করা হয়েছিল। এখন তা সরানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। অবশ্য, বালি সরিয়ে প্রকট হয়ে পড়া সেই গর্তের স্থানগুলো নতুন পদ্ধতিতে মেরামত করা হবে।
এএসআই (ASI)-এর অতিরিক্ত মহানির্দেশক জানভিজ শর্মা বলেন, ‘‘এই মন্দির ঐতিহ্যের স্মৃতিস্তম্ভ এবং আমরা সময়ে সময়ে পরিদর্শন ও সমীক্ষা পরিচালনা করে থাকি।’’ জানা গিয়েছে, ইংরেজ আমলেও মন্দিরের (Konark Sun Temple) অবক্ষয় প্রতিরোধ করতে সচেষ্ট হয়েছিলেন ব্রিটিশরা। বিভিন্ন সময়ে স্থাপত্যে গর্ত সৃষ্টি হলে তা ঠিকঠাক করা হতো। এই বিশাল স্থাপত্যের দ্বারমুখ স্থানটিকে বালি দিয়ে ভরাট করার কাজ করেছিলেন তাঁরা। এবার প্রায় একশো বছরের পরে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (এএসআই), স্থাপত্যের চারপাশে পুনরায় কাজ করা শুরু করেছে। মন্দিরের জগমোহন অর্থাৎ দ্বারমুখ-এর স্থায়িত্ব এবং বালির বর্তমান অবস্থার মূল্যায়ন করার জন্য কাজ শুরু হয়েছে (ASI)। বালির স্তর ১৫ ফুট বসে গিয়েছে। যার জেরে একটি বড় গহ্বরের সৃষ্টি হয়েছে।”
১৯০৩ সালে বাংলার লেফটেন্যান্ট গভর্নর জেএ বোর্ডিলনের নির্দেশে ৭০ ফুট উঁচু জগমোহন বা দ্বারমুখ বালি দিয়ে ভরাট করা হয়েছিল। এএসআই (পুরী সার্কেল) এর সুপারিনটেনডিং প্রত্নতাত্ত্বিক, দিবাশাদ গডনায়েক বলেন, “মন্দিরের (Konark Sun Temple) সংরক্ষণ প্রক্রিয়ায় বহু-মুখী পদক্ষেপ করা হয়েছে। সবটাই মন্দিরের সংরক্ষণ এবং সমীক্ষা-মূল্যায়নের সঙ্গে সম্পর্কিত। এখন প্রাথমিকভাবে, কাঠামোগত অখণ্ডতা ও স্থিতিশীলতা মূল্যায়ন করার জন্য মন্দিরের দেওয়ালে একটি ছোট গর্ত করা হবে (ASI)। এরপর তাঁকে অনুসরণ করে, লেজার স্ক্যানিং এবং এন্ডোস্কোপির মতো উন্নত কৌশলগুলি ব্যবহার করা হবে।”
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত “সূর্য মন্দিরের সংরক্ষণ” বিষয়ক একটি জাতীয় সম্মেলনের সময়, ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে তকমা অর্জন করেছিল এই মন্দির। তবে এই সম্মেলনে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। তিনিই ১৯০৩ সালে ব্রিটিশদের দ্বারা মন্দিরের জগমোহন থেকে ভরাট করা বালি সারানোর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন। সেন্ট্রাল বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট (সিবিআরআই)-এর নেতৃত্বে এন্ডোস্কোপি গবেষণায় উল্লেখযোগ্য কাঠামোগত ক্ষতি প্রকাশের পর কোনার্ক মন্দিরের (Konark Sun Temple) জগমোহন থেকে বালি সারিয়ে ফেলা অপরিহার্য বলে মনে করা হয়েছিল। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মাথায় একটি বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। তাই বালি সরিয়ে আবার বালি দিয়ে ভরাট করা হবে (ASI)। এই কাজ হবে প্রায় সাড়ে ১২ ফুট স্থাপত্যে জুড়ে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।