img

Follow us on

Saturday, Nov 09, 2024

Green Hydrogen Plant: লেহ্তে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচুতে গ্রিন হাইড্রোজেন প্ল্যান্ট নির্মাণ এনটিপিসি-র, কতটা তাৎপর্যপূর্ণ?

NTPC: লেহ্-র এনটিপিসি প্ল্যান্টে বাৎসরিক কত টন সবুজ হাইড্রোজেন উৎপাদন হবে জানেন?...

img

লাদাখের লে-এনটিপিসি গ্রীন হাইড্রোজেন প্ল্যান্ট। সংগৃহীত চিত্র।

  2024-10-29 17:19:28

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: লাদাখের লেহ্তে বিশ্বের সব থেকে উঁচুতে সবুজ হাইড্রোজেন প্ল্যান্ট (Green Hydrogen Plant) স্থাপন করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এনটিপিসি (NTPC)। ভারতই এখন বিশ্বের একমাত্র দেশ, যে শুধুমাত্র মিষ্টি জল থেকে হাইড্রোজেন জ্বালানি শক্তির উৎপাদন নিখুঁতভাবে করতে সক্ষম। এই জ্বালানিটি ইতিমধ্যেই ভারতের রকেট উৎক্ষেপণে ব্যবহৃত হয়েছে। এবার দুর্গম লে-লাদাখ থেকে শুরু করে প্রবলভাবে দূষিত রাজধানী দিল্লির অঞ্চলে (এনসিআর) গণ-পরিবহণের চালিকা শক্তি হিসেবে গ্রিন হাইড্রোজেন বেশি করে ব্যবহার করা হবে। দূষণরোধক এবং অধিক শক্তি উৎপাদনী জ্বালানি হিসেবে সবুজ হাইড্রোজেনের গুরুত্ব অপরিসীম। ভারতে ব্যাপক ভাবে জ্বালানি শক্তির চাহিদা রয়েছে এবং সেই জন্য সরকার অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে স্থানীয় শক্তির সমাধান খুঁজছে। দেশের গতিকে আরও বৃদ্ধি করতে বিকল্প জ্বালানি হিসেবে গ্রিন হাইড্রোজেনের কথা বারবার তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন মোদি (Green Hydrogen Plant)

হাইড্রোজেন বিশেষ ভাবে আকর্ষণীয় কারণ, এটি জলকে বিভক্ত করে উৎপাদিত হয়। আবার অপর দিকে এই হাইড্রোজেন মৌলের একমাত্র নির্গমন হয় জল থেকেই। এনটিপিসির (NTPC) গ্রিন হাইড্রোজেন প্ল্যান্টটি লাদাখের লেহ্-তে বিশ্বের সর্বোচ্চ উচ্চতায় অবস্থিত একটি অত্যাধুনিক প্রকল্প। ২০২২ সালের ১ অগাস্ট, প্রধানমন্ত্রী মোদি এই অনন্য প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। সবচেয়ে হালকা এবং প্রচুর পরিমাণে হাইড্রোজেন (Green Hydrogen Plant) উপাদান ভবিষ্যতের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য জ্বালানি হবে। সরকারও তেল এবং গ্যাসের বিকল্প জ্বালানির সম্ভাবনাকে অন্বেষণ করছে। ফলে দূষণজনিত জ্বালানির বিকল্প হল এই সবুজ হাইড্রোজেন। অপরে জৈব জ্বালানির জলও থেকে ব্যাপকভাবে হাইড্রোজেন উৎপন্ন করা যায়।

সবুজ হাইড্রোজেন কী?

হাইড্রোজেন এতটাই শক্তি-সমৃদ্ধ যে তা তরল আকারে তরল অক্সিজেনের সঙ্গে মিলিত হয়ে আরও শক্তিশালী হয়। আর তাই ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর (ISRO) সবচেয়ে ভারী রকেটকে উৎক্ষেপণ করতে এই শক্তিকেই ব্যবহার করা হয়েছিল। ভারতের স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেল মার্ক-৩ তার ৬৪০-টন রকেটে তরলীকৃত হাইড্রোজেন ব্যবহার করেছিল। উল্লেখ্য চন্দ্রযান ৩-এর ঐতিহাসিক মিশনে এই শক্তিকে ব্যবহার করা হয়েছিল। হাইড্রোজেন একদিকে যেমন অত্যন্ত দাহ্য, অপর দিকে চরম সতর্কতা নিয়ে ব্যবহার করতে হয়। তাহলে সবুজ হাইড্রোজেন (Green Hydrogen Plant) আসলে কী? হাইড্রোজেনকে যখন পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি হিসেবে উৎপাদন করা হয়, তখন এটি সবুজ হাইড্রোজেন হিসাবে বিবেচিত হয়। আবার অন্যান্য নানা ধরণের হাইড্রোজেনও হয়। যেমন-ধূসর বা বাদামী হাইড্রোজেন, যা আরও  শক্তিশালী জ্বালানি। তবে এগুলিও জীবাশ্ম জ্বালানি।

দৈনিক ৮০ কেজি হাইড্রোজেন উৎপাদন হবে

লাদাখের লেহ্-র কাছে চোগলামসার গ্রামে, এনটিপিসি (NTPC) সবুজ হাইড্রোজেন উৎপাদনের জন্য একটি পরীক্ষামূলক প্ল্যান্ট স্থাপন করেছে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচুতে স্থাপিত সবুজ হাইড্রোজেন (Green Hydrogen Plant) ফুয়েলিং স্টেশন। লাদাখ একটি ঠান্ডা মরুভূমি অঞ্চল, সূর্যের আলো দ্বারা অত্যন্ত সমৃদ্ধ, বছরে ৩০০ দিনের বেশি মেঘমুক্ত থাকে। এখানে, এনটিপিসি একটি ১.৭ মেগাওয়াট সোলার ফটোভোলটাইক প্ল্যান্ট স্থাপন করেছে। সেখান থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ একটি ইলেক্ট্রোলাইজারকে শক্তি দেয়, যা জলকে হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেনে বিভক্ত করে। এই প্রক্রিয়ায় উল্লেখযোগ্য শক্তির জোগান মেলে। এতে হাইড্রোজেনকে জ্বালানি হিসাবে গ্রহণ করা হয় এবং অপর দিকে অক্সিজেন নির্গত হয়। এনটিপিসি জানিয়েছে, এই প্ল্যান্টটি দৈনিক ৮০ কেজি হাইড্রোজেন উৎপাদন করতে সক্ষম। ফলে লেহ্ এলাকার আশেপাশে পাঁচটি ইন্ট্রা-সিটি ফুয়েল-সেল ইলেকট্রিক বাস চালানো যাবে। মোটামুটি ভাবে প্রতিদিন সব মিলিয়ে ১১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত যানবাহনের জ্বালানি মিলবে।

বার্ষিক ২৩০ মেট্রিক টন বিশুদ্ধ অক্সিজেন ছাড়বে

এনটিপিসি-র (NTPC) সূত্রে জানা গিয়েছে, লেহ্-স্টেশনটি অত্যন্ত দূষণকারী জীবাশ্ম-জ্বালানি যানবাহনের বিকল্প শক্তিকেন্দ্র হয়ে উঠবে। একইভাবে দূষণরোধে বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করবে। এখানে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির উৎসগুলিকে একত্রীকরণ করা হবে। এমনকী, সঙ্কটের পরিস্থিতিতেও জ্বালানির নির্ভরযোগ্যতা বাড়াবে। এতে কার্বন নির্গমন হ্রাস হয়ে একটি স্বচ্ছ জ্বালানি ইকোসিস্টেমকে প্রতিস্থাপন করবে। এনটিপিসি-র এই স্টেশনটি প্রতি বছর আনুমানিক ৩৫০ মেট্রিক টন কার্বন নির্গমন কমাবে এবং বার্ষিক ২৩০ মেট্রিক টন বিশুদ্ধ অক্সিজেন ছাড়বে, যা প্রায় ১৩,০০০ গাছ লাগানোর সমতুল্য বলে বিবেচিত হবে। লাদাখে উচ্চ সৌরতাপ বিকিরণ এবং ঠান্ডা তাপমাত্রার কারণে এই অঞ্চলটি সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত আদর্শ। স্থানীয়ভাবে গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদন ও ব্যবহার জ্বালানি সরবরাহের চাহিদা দূর করবে। একইসঙ্গে এই এলাকাগুলিকে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং সড়ক যোগাযোগে বাধাগুলিকে দ্রুত নিরসন করবে। তবে, একটা চ্যালেঞ্জ রয়ে যাচ্ছে। তা হল, জলকে হাইড্রোজেন (Green Hydrogen Plant) এবং অক্সিজেনে বিভক্ত করা বা  বৈদ্যুতিক বাসগুলিতে ব্যবহৃত জ্বালানি কোষগুলিকে চালনার জন্য যে যে ইলেক্ট্রোলাইজার ব্যবহার করতে হয়, সেগুলিকে বর্তমানে আমদানি করা হয়। যে কারণে, বর্তমানে প্রচলিত জীবাশ্ম-জ্বালানি চালিত বাস বা যানবাহনের তুলনায় হাইড্রোজেন-চালিত যানবাহন ব্যয় বহুল। এক্ষেত্রে,  স্থানীয়ভাবে এই প্রযুক্তির বিকাশ হলে ভবিষ্যতে এই উদ্যোগ ব্যাপকভাবে এগিয়ে যেতে পারে।

অর্থনীতিতেও, গ্রীন হাইড্রোজেন প্রভাব ফেলবে

এনটিপিসি-র (NTPC) চিফ জেনারেল ম্যানেজার ডিএমআর পান্ডা বলেছেন, “গ্রিন হাইড্রোজেন (Green Hydrogen Plant) উৎপাদন করা ভারতের শক্তি নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। শক্তির স্বাধীনতা এবং স্বয়ং উৎপাদনে স্বনির্ভরতা বাড়বে৷ সর্বোপরি, আমাদের প্রচুর সৌর রশ্মি এবং জল রয়েছে৷ ভারত এই শক্তির কার্বনাইজেশন করছে৷ অর্থনীতিতেও, গ্রিন হাইড্রোজেন প্রভাব ফেলবে। জল থেকে উৎপন্ন শক্তি এবং নিঃসরণ হিসাবে সৌর শক্তি, প্রকৃতপক্ষে লেহ্ এবং দিল্লি এনসিআর গ্রিন হাইড্রোজেন প্রকল্পগুলি বেশ ফলপ্রসূ হবে। ২০৭০ সালের মধ্যে জ্বালানিতে এই উপাদানের ব্যবহার সর্বাত্মক করতে ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।  দেশের প্রধানমন্ত্রীও আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।”

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Tags:

Madhyom

Narendra Modi

bangla news

Bengali news

news in bengali

Production

Green Hydrogen Plant

Ladakhs Le-NTPC

hydrogen plant


আরও খবর


খবরের মুভি


ছবিতে খবর